ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম কি বলে জেনে নিন

ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম কি বলে? সে সম্পর্কে আজকে আপনাদের জানাবো। ফেব্রুয়ারি মাসের কথা আসলেই মনে হয় যে প্রেমের মাস। মনে বসন্তর ছোঁয়া ভাসে এবং হাতে লাল গোলাপ।

ভ্যালেন্টাইন-ডে-এর-ইতিহাস-ইসলাম

এ মাসে রোজ ডে দিয়ে শুরু হয় এবং আরো অনেক ডে থাকে তারপর বহুল প্রতীক্ষিত সেই ভ্যালেন্টাইনস ডে। ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবস। বাংলাদেশী এই ১৪ই ফেব্রুয়ারি পালন করা শুরু হয় ১৯৯৯ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি থেকে। চলুন জেনে নেয়া যাক এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত

পোস্ট সূচীপত্রঃ ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম

ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম

ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম, ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবস পালিত হয়। দুইশত ৭০ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি, সেই সময় রোমের সম্রাট ছিলেন কর্ডিয়াস। সেই সময় ভ্যালেন্টাইন নামের এক সাধু ছিল সে তরুণ যুবকদের মাঝে প্রেমিকদের মাঝে গোপন মন্ত্র শিখিয়ে দিতেন। এটি একটি বড় ধরনের অপরাধ মনে করে সেই সেই সময়ের রুমের সম্রাট কর্ডিয়াস ভ্যালেন্টাইন নামের সেই সাধুর মৃত্যুদণ্ড দিয়ে তার শিরশ্ছেদ করেন।

সেই সাধুর নাম ভ্যালেন্টাইন নাম থেকেই এই দিনটির নামকরণ করা হয়েছে। তার এ ভ্যালেন্টাইন নাম থেকে আজকে সারা বিশ্ব এ দিনটিকে ভ্যালেন্টাইন ডে যা আজকের বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে এ দিনটি পালন করা হয় ১৯৯৯ সাল থেকে। এই দিনটিকে এখন বিশ্ববাসী বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হিসেবে উদযাপন করছে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন স্তরের ছাত্রছাত্রীরা বিশেষ করে যারা যুবক-যুবতী হয়েছে তারা এ দিনটিতে প্রেমের জোয়ারে ভেসে যায়।

নিজেদের রূপ সৌন্দর্যকে প্রদর্শনের জন্য রাস্তায় নেমে আসে। শুধু এটাই নয়, অঙ্কন শিল্পীরা উল্কিয়া আকার জন্য পসরা সাজিয়ে বসে থাকে রাস্তার ধারে। তাদের সামনে তরুণীরা পিট হাত বাহু হাত মেলে বসে থাকে নিজের পছন্দমত পসরা তৈরি করে নেয়ার জন্য। তারপর থেকে প্রেমিক-প্রেমিকা রাতভর প্রেমের সাগরে ডুবে থাকে। অসামাজিক যত কার্যক্রম অশ্লীলতা, খোশগল্প, বেহায়াপনা, নগ্নতা ছেয়ে ফেলে তাদেরকে।

এছাড়াও তারা অনেক সময় অবৈধভাবে শারীরিক সম্পর্ক করে থাকে। এটিই হলো ভ্যালেন্টাইন ডে অর্থাৎ বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের চিত্র। তাহলে ভালোবাসা দিবসের মর্যাদা কোথায় রাখল এরা? নগ্নতা অশ্লীলতা অসামাজিকতা দিয়ে এরা নিজেদেরকে ডুবিয়ে রাখে এটাই নাকি আবার ভালোবাসা। ভালোবাসার শব্দটি পবিত্র কিন্তু এরা অপবিত্র কাজকর্মের মাধ্যমে এ পবিত্র শব্দটাকে অপবিত্র করে তোলে।

ভালোবাসা হলো মনের গহীনে প্রবাহমান থাকা এক অনুভূতি। ভালোবাসা সকল সৃষ্টি জীবের মধ্যেই রয়েছে। আমাদের সকলের মাঝে সম্প্রীতি স্থাপনের জন্য প্রীতি ভালবাসা বজায় রাখার জন্য আল্লাহ সকল সৃষ্টি জীবের মধ্যে ই ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিয়েছেন। কিন্তু এই ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস নামের একদিনে মানুষ তাদের নিজেদের চরিত্রকে, নিজেদের সৌন্দর্যকে রাস্তায় বিলিয়ে দিচ্ছে যা ভালবাসা নয় অশ্লীলতা।

ফেব্রুয়ারি মাসে কোন দিন কি ডে পালন করা হয়

ফেব্রুয়ারি মাসে বিভিন্ন দিনকে বিশেষভাবে পালন করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে ফেব্রুয়ারি মাসকে ভালোবাসার মাস হিসেবে উদযাপন করে থাকে। সাত থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভালবাসার সপ্তাহ হিসেবে উদযাপন করা হয়। এটি মূলত শুরু হয় ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে। ৭ই ফেব্রুয়ারি রোজ ডে হিসেবে পালন করা হয়, এ দিনে প্রেমিক-প্রেমিকা একে অপরকে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে গোলাপ ফুল দিয়ে থাকে। ৮ই ফেব্রুয়ারি হল প্রপোজ ডে, এই দিনে ভালোবাসার মানুষকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে থাকে। 

তারপর ৯ ফেব্রুয়ারি চকলেট ডে, এ দিনে প্রিয়জনকে ভালোবেসে চকলেট উপহার দেয়া হয় সম্পর্কটাকে আরো মধুর করে তোলার জন্য। ১০ এ ফেব্রুয়ারি টেডি ডে, এদিনে প্রিয়জনকে ভালোবেসে টেডি বিয়ার উপহার দিয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করা হয়ে থাকে। ১১ ফেব্রুয়ারি প্রমিস ডে, এ দিনে প্রেমিক-প্রেমিকা একে অপরকে প্রমিস করে থাকে বিভিন্ন বিষয়ে। ১২ই ফেব্রুয়ারি হাগ ডে, এদিনের প্রেমিক প্রেমিকা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ভালোবাসার প্রকাশ ঘটিয়ে থাকে। 

১৩ই ফেব্রুয়ারি কিস ডে, এদিনে ভালোবাসার মানুষকে চুমু দেয়ার মাধ্যমে ভালোবাসা প্রকাশ করে থাকে। এছাড়াও ১৩ই ফেব্রুয়ারি, বিশ্ব রেডিও দিবস রয়েছে। তারপর অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন ডে, এই দিনটি ভালোবাসা উদযাপনের প্রধান দিন হিসেবে পালন করে থাকে। এছাড়াও একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এই দিনটি সকলেই পালন করে থাকে।

ভ্যালেন্টাইন ডে পালনে ধর্মীয় ও সংস্কৃতিক প্রভাব

ভ্যালেনটাইন ডে একটি পশ্চিমা সংস্কৃতির উৎসব। যা প্রতি বছর সারা বিশ্ব পালন করা হয়ে থাকে। ভ্যালেন্টাইন ডে খ্রিস্টান ধর্মের সংস্কৃতির একটি অংশ। যেখানে ভালোবাসা প্রকাশের নামে ফুল, টেডি বিয়ার, কিস আরো নানান ধরনের অশ্লীলতা করা হয়। আজ সারা বিশ্বে ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপন করা হয় নানান ধরনের অশ্লীলতা, বেহায়াপনা নোংরামির মাধ্যম দিয়ে। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গুলো গড়ে তুলছে এই খ্রিস্ট ধর্মের অনুসরণ করে। 

খ্রিস্টানরা এই প্রেম ভালবাসাকে অনৈতিক, অসামাজিক, অশ্লীলতার মাধ্যম দিয়ে প্রকাশ করে মানুষের নৈতিক চরিত্র বিলীন করে দিতে এ নোংরামির আয়োজন করেছে। খ্রিস্টানরা তাদের ধর্ম যাজকের দেখানো নৈতিক পথকে অনৈতিক করে তুলেছে। ভ্যালেন্টাইন ডে একটি খ্রিস্টান রীতি চর্চার অংশ। এটি মূলত গড়েই উঠেছে খিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের মাধ্যমে। এটি আজ সারা বিশ্ব পালন করছে এই সংস্কৃতির অংশ হিসেবে ফুল কার্ড এসবের মাধ্যমে। 

ইসলামে ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপনের মনোভাব 

আল্লাহ প্রদত্ত রাসূল প্রদর্শিত বিধান অনুযায়ী বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম হলো ইসলাম। ইসলামী সকল কিছু পালনের জন্য একটি নির্দিষ্ট নিয়ম নীতি অনুসরণ করা হয়। প্রতিটি উৎসবেরই একটি ঐতিহাসিক পটভূমি থাকে ও ধর্মীয় পটভূমি থাকে। সেই পটভূমিকে অনুসরণ করে সে পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করে উৎসবগুলো পালন করা হয়। মুসলিমদের জন্য রয়েছে ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা এ দুটি প্রধান উৎসব সহ আরো অনেক উৎসব রয়েছে।

ইসলামে-ভ্যালেন্টাইন-ডে-উদযাপনের-মনোভাব

ভ্যালেন্টাইন ডে ইসলামের রীতিনীতি অনুযায়ী একটি অনৈতিক কাজ। মুসলমানদের জন্য ভালোবাসার প্রকাশ ঘটানোর অনেক নৈতিক মাধ্যম রয়েছে। বিবাহ বহির্ভূত প্রেম ভালবাসা ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়। ভ্যালেন্টাইন ডে ইসলামী সংস্কৃতি ও ধর্মীয় রীতি-নীতি বহির্ভূত অনুপ্রবেশকারী একটি অমুসলিম উৎসব। এটি কখনোই ইসলামের সংস্কৃতি নয়। এটিকে যারা ইসলামিক সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচনা করছেন তারা নিতান্তই ধর্ম বহির্ভূত কাজ করছেন। 

মুসলমানদের জন্য ভালোবাসা প্রকাশ করার সঠিক পথ

মুসলমানদের সার্বিক জীবন পরিচালনার জন্য সঠিক নিয়ম নীতি রয়েছে। যার মাধ্যম দিয়ে একজন মুসলিম তার সার্বিক জীবন পরিচালনা করে থাকে। মহাগ্রন্থ আল কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত সকল কিছুই একজন মুসলিমের পথ চলার দিকনির্দেশনা। তেমনি ভালোবাসা প্রকাশের জন্য ইসলামে সঠিক পথ রয়েছে। সেটা হল বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া। বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার মাধ্যম দিয়ে একজন দম্পতি অর্থাৎ একজন পুরুষ এবং মহিলা তার সকল কামনা-বাসনা পূর্ণ করতে পারে। 

ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে ভালোবাসা প্রকাশের জন্য সর্বোত্তম ও উপযুক্ত পন্থা হলো পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া। অর্থাৎ একটি বৈধ সম্পর্কের মধ্যে থেকে ভালোবাসা প্রকাশ করা। একটি পরিবার সমাজের মধ্যে শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখতে ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি মানা আমাদের জন্য আবশ্যক। একজন স্বামী স্ত্রী শুধু একটি দিনই ভালোবাসা প্রকাশ করবে তা নয়। একজন দম্পতি প্রতিদিনই তার ভালোবাসা প্রকাশ করবে বৈধপন্থায়। ১৪ই ফেব্রুয়ারি যে বেহায়াপনা করা হয় এটা কখনো ইসলাম সমর্থন করে না। 

একজন মা ভালোবাসার কারণেই তার গর্ভে সন্তান ধারণ করে থাকে। আর তার পিতা কঠোর পরিশ্রম করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তার সে সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করে। আর এই ভালোবাসা থাকার কারণে বন জঙ্গলের হিংস্র প্রাণী ও তাদের সব গোত্রের সাথে কখনো দাঙ্গা করে না, সম্প্রীতি বজায় রেখে চলাফেরা করে। এই ভালোবাসা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের একটি দান।

নশ্বর এই জীবনে পৃথিবীর প্রতি মায়া হবে এটাই ঠিক তবে এই ভালোবাসা প্রকাশের জন্য আমার দিনক্ষণ তারিখের প্রয়োজন পড়ে না। ভালোবাসা সবসময়ই বহমান থাকবে, একটি নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট ক্ষণে ভালোবাসার উচ্ছাস বয়ে যাবে এরকম কোন বিষয় নয়। ভালোবাসার মধ্যে যখন কোন দুনিয়াবী কোন চাওয়া পাওয়া থাকবে না তখন সে ভালোবাসা হবে আসল ভালবাসা। স্বামী স্ত্রী সন্তান-সন্তুতি একে অপরকে ভালবাসবে এটাই স্বাভাবিক এটার জন্য কোন নির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজন নেই।

ভ্যালেন্টাইন ডে পালন ইসলাম সমর্থন করে কিনা

ভ্যালেন্টাইন ডে পালনের জন্য যেসব মাধ্যম অবলম্বন করে থাকে সেগুলো ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম এ কখনোই সমর্থন করে না। ভ্যালেন্টাইন ডে পালনের জন্য ছেলে মেয়েরা অবাধভাবে মেলামেশা করে, অনেক ব্যয় করে থাকে, নোংরামি, অশ্লীলতা সহ আরো যে কাজগুলো করে থাকে তা ইসলামের সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। ইসলাম কখনোই এভাবে অপচয় করা এবং অবাধভাবে মেলামেশা করা সমর্থন করে না।

ভ্যালেন্টাইন ডে তে ছেলেমেয়েরা অবাক হবেন নোংরামি অসামাজিক কার্যকলাপ বেহায়াপনা করে থাকে। এছাড়াও অনেক সময় এই দিনে অনেকে অবৈধভাবে শারীরিক মিলন করে থাকেন। ইসলাম কখনোই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে সমর্থন করে না। ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সকল জীবের মধ্যে ভালোবাসা পয়দা করে দিয়েছেন। তা বলে এই নয় যে তারা অনৈতিকভাবে অবৈধভাবে সেই ভালোবাসাকে পূর্ণতা দেয়ার চেষ্টা করবে। তাই বলা যায় যে ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম পর্যবেক্ষণ করে দেখে কখনোই সমর্থন করে না। 

ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহিত জীবনের গুরুত্ব 

ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহিত জীবনের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতিটি জীবের মধ্যেই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ভালোবাসা পয়দা করে দিয়েছেন। সর্বশ্রেষ্ঠ জীব মানুষ মানুষকে ভালোবাসবে এটাই স্বাভাবিক। ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম এ ধর্মে সকল কিছুরই নিয়ম-নীতি রয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ভালোবাসাকে উপভোগ করার জন্য বিবাহ করার জন্য বলেছেন। একমাত্র সঠিক পন্থা হলো বিবাহ করে দাম্পত্য জীবনকে উপভোগ করা। 

ইসলামের-দৃষ্টিতে-বিবাহিত-জীবনের-গুরুত্ব

আজকাল প্রেম ভালোবাসা একটি সংস্কৃতি হয়ে গেছে। স্কুল-কলেজে বিশ্ববিদ্যালয় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লক্ষ্য করলে আমরা দেখব যে প্রতিটি শিক্ষার্থী অনৈতিক সম্পর্কের সাথে জড়িত। এই প্রেম ভালোবাসা করতে যেয়ে অনেকেই তার দেহকে বিলিয়ে দিচ্ছে। অথচ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বিবাহ করতে বলেছেন, তারা ইসলামিক ভাবে নিজেদের ভালবাসাকে উপভোগ না করে অনৈতিকভাবে, অবৈধভাবে করছে।

তাই বলা যায় যে ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহিত জীবনের গুরুত্ব অনেক। আমাদের সকলের উচিত আমাদের বিবাহিত জীবনকে উপভোগ করা কোনো নীতি বহির্ভূত পন্থায় নয়। ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম গবেষণা করে যা দেখে তা পুরোপুরি ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক। তাই অবশ্যই অনৈতিক পন্থা ত্যাগ করে আমাদের ইসলামের দেখানো পথে দেখানো মতে আমাদের দাম্পত্য জীবনকে উপভোগ করা উচিত। ভালোবাসার ক্ষেত্রে একে অপরের মাঝে সততা, নৈতিকতা ও একে অপরকে সম্মান করা অপরিহার্য।

ভ্যালেন্টাইন ডে পালনে মুসলিমদের করণীয় 

মুসলিমদের উচিত অবশ্যই এই অমুসলিম কালচার অর্থাৎ খ্রীষ্টানিক কালচার থেকে দূরে থাকা। বর্তমানে আমাদের সমাজে ভ্যালেন্টাইন ডে যে কাজ কর্মগুলো করা হয় তা ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক এটি কখনো ইসলাম সমর্থন করে না। যুবক যুবতী রাস্তায় নেমে যে অশ্লীল কার্যকলাপ গুলো করে। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে, কিস করে আরো নানান ধরনের অশ্লীল বেহায়াপনা অনৈতিক ও অসামাজিক যে কার্যকলাপ গুলো করে তা থেকে আমাদের দূরে থাকা উচিত।

ভ্যালেন্টাইন ডে থেকে দূরে থেকে আমাদের ইসলামি যে সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধ রয়েছে সেগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে দূরে থাকা উচিত। আমাদের ইসলামিক যে দিবসগুলো রয়েছে সেগুলো পালন করা উচিত। এগুলো নিয়ে উৎসব মাতামাতি করুন কোন সমস্যা নেই কিন্তু এই অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকুন। এক্ষেত্রে নিজেদের ধর্মীয় পরিচয় বজায় রাখা আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ইসলামে ভালোবাসার মূল অর্থ ও উদযাপনের পদ্ধতি

আমাদের এই সামগ্রিক জীবনে চলাফেরার জন্য অবশ্যই আমাদের একে অপরকে ভালোবাসা উচিত। তবে এ ভালোবাসা অবশ্যই হবে আমাদের মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টির জন্য। দুনিয়ার কোন মানুষের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নয়। এই ভালোবাসা শুধু স্বামী স্ত্রীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে তা নয়। পিতা মাতা, সন্তান-সন্ততি সকলের প্রতি ভালোবাসা থাকবে। এ ভালোবাসার মধ্যে থাকবে দায়িত্ববোধ ও মমত্ববোধ।

কিন্তু পশ্চিমা বিশ্ব আমাদেরকে সেই সংস্কৃতি থেকে দূরে রেখে আমাদেরকে শেখাচ্ছে অশ্লীল কার্যকলাপ। এটি যুব সমাজের ওপর অনেক বড় একটি প্রভাব ফেলে। শুভ সমাজকে পথভ্রষ্ট করার জন্য মূলত তাদের এই আয়োজন। তাই মুসলমানদের উচিত অবশ্যই এ সংস্কৃতি থেকে দূরে থেকে ইসলামী সংস্কৃতি বুকে লালন করা এবং সে অনুযায়ী এ বাস্তবে জীবনে চলে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি অর্জন করা। 

শেষ কথাঃ ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম 

ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম পর্যবেক্ষণ করে যা দেখে তা মূলত হল এই ভ্যালেন্টাইন ডে একটি অশ্লীলতা, অসামাজিকতা, বেহায়াপনা শিক্ষা দেয় আমাদের এই যুবসমাজকে। ভালোবাসা প্রকাশের সঠিক পদ্ধতি নয় এটি। ইসলাম আমাদেরকে যে ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যম শিক্ষা দিয়েছেন সেগুলো অবশ্যই আমাদেরকে মেনে চলা উচিত। এই পশ্চিমা অপসংস্কৃতি থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে তবেই এ বাস্তব জীবনে এবং পরকালীন জীবনে সফল হতে পারব। 

পশ্চিম খ্রিস্টানরা আমাদেরকে যে অপকর্ম অপসংস্কৃতি গুলো শিক্ষা দিচ্ছে এগুলো কোরআন সুন্নাহর সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে ভালবাসা প্রকাশ করার জন্য মাধ্যম বলে দিয়েছেন সে মাধ্যমগুলো আমরা অনুসরণ করে আমাদের ভালোবাসা প্রকাশ করব। ভালোবাসার জন্য কখনো নির্দিষ্ট দিন ও ক্ষণ প্রয়োজন পড়ে না। তাই অবশ্যই আমাদের এই অপসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে ইসলামী মূল্যবোধকে সম্মান করে সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করে ইহকালীন কল্যাণ এবং পরকালীন মুক্তি লাভ করতে হবে। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জ্ঞান পিপাসুর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url