ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে
ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে এর সম্পর্কে এ ব্লগে আপনাদেরকে জানাবো। ডিজিটাল প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নতি সাধনে আমাদের জীবনযাত্রাকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ করলেও ডিজিটাল প্রযুক্তির ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক রয়েছে।
ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে আমুল পরিবর্তন বয়ে এনেছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক বিবেচনা করে এর সঠিক ব্যবহার করতে হবে। চলুন জেনে নেয়া যাক ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রভাবে আমাদের কি পরিবর্তন হচ্ছে
পোস্ট সূচীপত্রঃ ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে
- ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে
- ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নতির ফলে যোগাযোগের বিপ্লব
- আধুনিক শিক্ষায় ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নতি
- ব্যবসা ও অর্থনীতিতে ডিজিটাল প্রযুক্তির ফলে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার
- চিকিৎসা খাতে স্মার্ট স্বাস্থ্য সেবার উন্নতি
- ডিজিটাল বিনোদন কেন্দ্র অফুরন্ত আনন্দ এখন অনলাইনে
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন ডিজিটাল বন্ধুত্বের জগৎ
- অফিস ছাড়াই বাসায় বসে কাজ
- সাইবার নিরাপত্তার অধীনে যুক্ত হওয়ার কৌশল
- ডিজিটালাইজেশনের ফলে ভ্রমণে নতুন উদ্যম
- আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও অটোমেশন এর ভবিষ্যৎ
- প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে কিভাবে প্রভাবিত করে
- শেষ কথাঃ ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে
ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে
ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে এই বিষয়টি আজকে আপনাদেরকে জানাবো। ডিজিটাল প্রযুক্তির আমূল পরিবর্তনের ফলে আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে অনেক পরিবর্তন সাধন করেছেন। ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলেছে। এখন আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ডিজিটাল প্রযুক্তি জড়িত। ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোঁয়া প্রতিটি ক্ষেত্রেই যেমন তথ্য যোগাযোগ শিক্ষা ব্যবস্থা বিনোদন স্বাস্থ্যসেবা সকল ক্ষেত্রেই অনেক বড় পরিবর্তন সাধন করেছে।
বর্তমান সময়ে ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনে অতি প্রয়োজনীয়। এটি আমাদের জীবনের সঙ্গে অতপ্রত ভাবে জড়িত হয়ে পড়েছে। মানুষ এখন চাইলে এক মুহূর্তেই যেকোনো তথ্য সংগ্রহ করতে পারে, অনলাইন শপিং করতে পারে, যোগাযোগ করতে পারে ও স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারে। তাই বলা যায় ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবন অনেক সহজ করে দিয়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে যেভাবে পরিবর্তন করেছে তা অভাবনীয়।
আরো পড়ুনঃ লুডু গেম খেলে প্রতিদিন ৫০০ টাকা আয় পেমেন্ট বিকাশে
ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নতির ফলে যোগাযোগের বিপ্লব
ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নতির ফলে বিশ্বের সকল প্রান্তে যোগাযোগ এখন আমাদের হাতের মুঠোয়। আগের দিনে যোগাযোগের জন্য ডাক ব্যবস্থা ও টেলিফোন ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল ছিল মানুষ, কিন্তু এখন ইন্টারনেটের ফলে মোবাইলে বিশ্বের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে যোগাযোগ করা খুবই সহজ। এখন মোবাইলে মাধ্যমে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম দিয়ে এবং ভিডিও কলের মাধ্যমে যেকোনো জায়গায় যোগাযোগ করা অনেক সহজ হয়ে গেছে।
এখন মেসেজিং অ্যাপ, ইমেইল এবং অনলাইনে মিটিং প্লাটফর্ম যেমন জুম, গুগল মিট ব্যবহার করে সহজেই ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক যোগাযোগ অনেক সহজ হয়ে পড়েছে। ব্যবসা, পারিবারিক ও সামাজিক যোগাযোগকে গতিশীল পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছে। এখন মানুষ চাইলেই পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকেই তারা নিজের আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব এবং কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে অনায়াসে। তাই বলা যায় ডিজিটাল প্রযুক্তি যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিপ্লব এনে দিয়েছে।
আধুনিক শিক্ষায় ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নতি
ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে বলতে গেলে অন্যতম যে পরিবর্তনটা লক্ষ্য করা যায় তা হলো শিক্ষা ব্যবস্থায়। ডিজিটাল প্রযুক্তির ফলে শিক্ষা ব্যবস্থা এক নতুন মোড় নিয়ে এসেছে। এখন চাইলেই যে কোন জায়গায় বসে অনলাইনে শিক্ষা গ্রহণ করা যায় ই-লার্নিং প্লাটফর্ম গুলো ব্যবহার করে। ভার্চুয়াল ক্লাসরুম, ই লার্নিং কোর্স, ডিজিটাল পাঠ্য বই এখন শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছে। আগের দিনে আধুনিক মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করার কোন উপায় ছিল না।
কিন্তু এখন বর্তমানে বিশ্বমানের শিক্ষা গ্রহণ করা অনেক সহজ হয়ে গেছে, যা আগের দিনে কল্পনাও করা যেতো না। এখন অনলাইনেই ঘরে বসেই বিভিন্ন কোর্স করে নিজের দক্ষতাকে বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে। তাই বলা যায় এখন শিক্ষার প্রসার ঘটানো সম্ভব হচ্ছে ঘরে বসেই। গত কোভিড ১৯ এর সময়ে এখন মানুষের বাহিরে বের হওয়া সম্ভব ছিল না মহামারির কারণে, সে সময় এই ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসার বেশি ঘটেছিল। ভবিষ্যতে ডিজিটাল প্রযুক্তি আরো উন্নতি সাধন করবে এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় আরো অগ্রগতি নিয়ে আসবে।
আরো পড়ুনঃ বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের ১০ টি শারীরিক পরিবর্তন
ব্যবসা ও অর্থনীতিতে ডিজিটাল প্রযুক্তির ফলে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার
ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার এবং উন্নতির ফলে এখন ই-কমার্স ব্যবসা, ডিজিটাল পেমেন্ট এবং অনলাইন মার্কেটিং ব্যবসার বিপুল উন্নতি সাধন হয়েছে এক নতুন রূপে। এখন অনলাইনে শপিং করার জন্য সহজেই যোগাযোগ করতে পারছে। অনলাইনে আলিবাবা, দারাজ ও অ্যামাজন সহজেই ক্রেতা-বিক্রেতারা বেচা-কেনা করতে পারছে। বর্তমানে ক্যাশলেস এর যুগে মোবাইল ব্যাংকিং ও ডিজিটাল ওয়ালেট গুলো অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করছে।
ডিজিটাল প্রযুক্তির ফলে ছোট বড় সকল ধরনের ব্যবসায়িক অনলাইনে তাদের পণ্য কেনাবেচা করতে পারছেন খুব সহজেই। এছাড়াও অনলাইনে ব্যবসিকরা তাদের পণ্য বিজ্ঞাপন ও বিপণন এর মাধ্যমে ব্যবসার পরিধি বাড়াতে পারছি। এখন মানুষ বাজারে যাওয়া ছাড়াও অনলাইনে বাসায় বসে বিভিন্ন ধরনের পণ্য খুব সহজেই কিনতে এবং বেচতে পারছে। তাই বলা যায় যে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবসায় এবং অর্থনীতিতে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে।
চিকিৎসা খাতে স্মার্ট স্বাস্থ্য সেবার উন্নতি
বর্তমান এই ডিজিটাল যুগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া এবং চিকিৎসা নেওয়া হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে অনলাইনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া যায় এবং ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবায় রেকর্ড থাকা রোগীদের চিকিৎসা গ্রহণের প্রক্রিয়াকে আরো সহজ করে দিয়েছে। এখন এই ডিজিটাল যুগে আমরা হাসপাতাল এবং ক্লিনিক গুলো আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে। এখন বর্তমানে চিকিৎসার কাছে যেতে না পারলেও অনলাইনে বড় বড় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
এছাড়াও বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সকল তথ্য সংরক্ষণ করা যায়, যা রোগীদের জন্য আরো উন্নত স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করতে সাহায্য করে। যা আগের দিনে সম্ভব ছিল না। বর্তমানে প্রযুক্তি দিনে দিনে আরও উন্নত করছে যা ভবিষ্যতে আমাদের আরো নানান ধরনের সুফল প্রদান করবে। তাই বলা যায় যে ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে চিকিৎসা সেবায় অনেক উন্নতি সাধন হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরো উন্নতি সাধন করা সম্ভব হবে। এজন্য ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
আরো কিছু জনপ্রিয় পোস্টের তালিকা
সকালে খালি পেটে রসুন ও মধু খাওয়ার ৮ টি উপকারিতা জানুন
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির ১০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
ডিজিটাল বিনোদন কেন্দ্র অফুরন্ত আনন্দ এখন অনলাইনে
ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রতিবেদন নিয়ে গবেষণা করলে দেখা যায় যে বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনের যে সকল আমুল পরিবর্তনগুলো বয়ে এনেছে তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো আমাদের বিনোদনের মাধ্যম অনলাইন। আজকাল অনলাইনে বিনোদন পাওয়া অনেক সহজ হয়ে উঠেছে। আমাদের বিনোদনের ধারণাকে সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করেছে ডিজিটাল প্রযুক্তি। বিভিন্ন ধরনের স্ট্রিমিং সার্ভিস কোম্পানি যেমন নেটফ্লিক্স, ইউটিউব, স্পটিফাই আমাদের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
এছাড়াও ভিডিও গেমিং আমাদের বিনোদনের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। আগের দিনে দেখা যেত মানুষ সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখছে বা টেলিভিশনে সিনেমা দেখতো। কিন্তু এখন বর্তমানে যুগে মানুষের চাহিদা অনুযায়ী কন্টেন্ট সার্চ করে দেখতে পারে। বর্তমানে ডিজিটাল বিনোদনের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোন প্রান্তের ইতিহাস ও সংস্কৃতি এবং বিনোদনের সাথে সহজেই নিজেকে পরিচিত করানো যায়। তাই বলা যায় যে বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের বিনোদনের ধারণাকেও সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করে দিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন ডিজিটাল বন্ধুত্বের জগৎ
বর্তমানে এই ডিজিটাল যুগে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার ও লিংকডিন এর মত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম এগুলো আমাদের যোগাযোগ কে অর্থাৎ মানুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের ধারণাকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। এখন মানুষ এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো ব্যবহার করে বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সহজেই যোগাযোগ এবং সম্প্রীতি স্থাপন করতে পারছে। বন্ধুবান্ধব সহকর্মী এবং পরিবারের সকল সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে।
এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো ব্যবসার প্রচার-প্রসার ঘটাতে অত্যন্ত সাহায্যকারী এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এর কিছু খারাপ কি করেছে যেমন ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হওয়ার আশঙ্কা অর্থাৎ ব্যক্তিগত গোপনীয়তা গুলো হুমকির মুখে পড়ে যাচ্ছে। ব্যক্তিগত তথ্যগুলো বা গোপনীয়তা গুলো হুমকির মুখে পড়ার মূল কারণ হলো না বুঝে ব্যবহার করা। তাই অবশ্যই সতর্ক হয়ে ব্যবহার করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ পুরুষদের জন্যে আদার খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা জেনে নিন
অফিস ছাড়াই বাসায় বসে কাজ
বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নতির ফলে ঘরে বসেই অফিসের কাজ করা যায়। এছাড়াও বাসায় বসে দূরবর্তী কাজ অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে বাসায় বসে অন্য মানুষের কাজ করে দেয়া যায়। এরকম কিছু প্লাটফর্ম যেমন ফাইভার, আপওয়ার্ক ও ফ্রিল্যান্সার ডটকম এর মত কাজের নতুন সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। আজকাল দেখা যায় অনেক প্রতিষ্ঠান রিমোর্ট ওয়ার্ক অর্থাৎ বাসায় বসে কাজ করা ব্যবস্থা করে দিয়েছে। যা কর্মীদের জন্যে আরো বেশি স্বাধীনতা প্রদান করছে।
ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে অফিসে না গিয়েও অফিসের সকল কার্যক্রম করা পরিচালনা করা সম্ভব। যে ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নতি সাধনের ফলে সকল কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে এবং যেকোনো জায়গা থেকেই করা সম্ভব হচ্ছে। অফিসে না গিয়েও অফিসের সকল কার্যক্রম করার ফলে নিজের স্বাধীনতা বজায় থাকছে। তাই বলা যায় যে ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে অনেক সহজ এবং সুন্দর করে দিয়েছে।
সাইবার নিরাপত্তার অধীনে যুক্ত হওয়ার কৌশল
বর্তমান এ যুগে ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নতি সাধনের পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। আজকাল ব্যক্তিগত জীবনের তথ্য সংরক্ষিত রাখা একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়ে হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এই সমস্যার সম্মুখীন হওয়া থেকে দূরে থাকারও উপায় রয়েছে। টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (2FA) এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হলো সাইবার নিরাপত্তা যা ব্যবহারকারীর পরিচয় নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
এটি দুটি স্তরের মাধ্যমে কাজ করে থাকে অর্থাৎ এটি পাসওয়ার্ড এর পাশাপাশি একটি নিরাপত্তা তার তৈরি করে। শুধু পাসওয়ার্ড সেট করলে তথ্য সুরক্ষিত রাখা যাবে না তাই টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহারকারী আসল কিনা এটি জানার জন্য দুই স্তরে পরীক্ষা করা হয়। প্রথমটি হল ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে, আর দ্বিতীয়টির অনেকগুলো নিয়মে করা যায় যেমন একটি হলো ওটিপি কোড অর্থাৎ মোবাইলে বা ইমেইলে কোড পাঠানো।
আরো পড়ুনঃ জামের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা
তারপর আরেকটি হলো অথেন্টিকেশন অ্যাপের মাধ্যমে চেক করা হয় যেমন গুগোল অথেনটিকেটার, মাইক্রোসফট অথেন্টিকেটর এসবের মাধ্যমে চেক করা হয়। আরেকটি হল বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন অর্থাৎ ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ফেস দিয়ে চেক করা হয়। আরেকটি হলো হার্ডওয়ার টোকেন অর্থাৎ এসবি ডিভাইস অথবা স্মার্ট কার্ড দ্বারা চেক করা হয়। টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহারের অনেকগুলো সুবিধা রয়েছে যেমনঃ
- সুরক্ষা বৃদ্ধি অর্থাৎ শুধুমাত্র পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখলে হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই টুয়েফে অথেন্টিকেশন ব্যবহার করা।
- সহজেই এই অথেনটিকেটার সিস্টেমগুলো সেটআপ করা যায়।
- ট্রু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন পাসওয়ার্ড কেউ জেনে ফেললেও সমস্যা নেই হ্যাক করতে পারবে না কারণ দ্বিতীয়টিতে বাধাপ্রাপ্ত হবে।
- ব্যক্তিগত তথ্য ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সুরক্ষার ক্ষেত্রে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ব্যাংকিং, ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়া, কর্পোরেট অ্যাকাউন্ট গুলোতে ব্যবহার করা জরুরী।
তাই অবশ্যই টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন এর আওতাধীনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ডিজিটালাইজেশনের ফলে ভ্রমণে নতুন উদ্যম
বর্তমান এই ডিজিটালাইজেশনের যুগে সকল কিছুই অনেক সহজ হয়ে গেছে। আমরা চাইলেই দ্রুততার সাথে যে কোন কিছু করতে পারি। সেটি হোক যোগাযোগ, ভ্রমণ বা আরো অন্যান্য বিষয় সমূহ। সকল কিছুই আমাদের হাতের মুঠোয়। তেমনি এই ডিজিটালাইজেশনের ফলে ভ্রমণের ক্ষেত্রে এক নতুন ধারা যুক্ত হয়েছে। এখন আমরা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার জন্য উবার, পাঠাও এবং লিফটের মতো রাইট শেয়ারিং সার্ভিস নিতে পারি।
এছাড়াও ট্রাভেল বুকিং অ্যাপ এবং গুগোল নেভিগেশন ব্যবহার করে আমরা যে কোন জায়গায় সহজে ভ্রমণ করতে পারি। শুধু ভ্রমণই নয় সেখানে রাত্রিযাপনের জন্যেও রিসোর্টে অগ্রিম অর্ডার দিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে ভ্রমণ করতে পারি যা আমাদের জন্য অনেক আরামদায়ক হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের ভ্রমণ ব্যবস্থাকে এক নতুন উদ্যমে তুলে ধরেছে। তাই বলা যায় যে সকল ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে অনেক সহজ করে দিয়েছে।
আরো পড়ুনঃ সিদ্ধ ছোলার উপকারিতা ও অপকারিতা
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও অটোমেশন এর ভবিষ্যৎ
ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নতির এই যুগে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) ও অটোমেশন বর্তমানে প্রযুক্তির সবচেয়ে উদ্ভাবনীয় দিকগুলোর অন্যতম একটি দিক। এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। এটি আমাদের ব্যবসা শিল্প কারখানা এবং আরো অন্যান্য খাতে ব্যাপক উন্নতি সাধন করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে ড্রাইভিং, অ্যাসিস্ট্যান্ট মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন উন্নত হচ্ছে।
বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানুষের মতো চিন্তা করতে সক্ষম। বর্তমানে আমরা যে যুগে বাস করছি ২০৫০ সালের দিকে আরও বেশি উন্নতি সাধন করবে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ধারণা করা যায় সে সময় মানুষের সকল কাজকর্ম আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে করা হবে। এ আই আমাদের জীবনকে নানা রকম ভাবে সহজ করেছে যেমন রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা পরামর্শ ও ঔষধের গবেষণা খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এছাড়াও অটোমেশন প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে স্বয়ংক্রিয় করে তুলেছে। এই অটমেশন ব্যবহারের ফলে আমরা কম সময়ে বেশি কাজ করতে সক্ষম হচ্ছি। আমাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় স্মার্ট মেশিনের কার্যক্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই বলা যায় যে এই ডিজিটালাইজেশনের যুগে এআই অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং অটোমেশন আমাদের জীবনকে আরো সহজ এবং সুন্দর করে তুলেছে।
এই অটোমেশন এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর মাধ্যমে নতুন নতুন কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে পেপারলেস অফিস, স্মার্ট গ্রিড ও ডিজিটাল মনিটরিং প্রযুক্তিতে অনেক সাহায্য করছে। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সকল কার্যক্রমকে আরো সহজ এবং উন্নত করে তোলা সম্ভব। তবে এর খারাপ দিকটি অবশ্যই মাথায় রেখে চলতে হবে। শুধু এটার উপর ভরসা করলেই হবে না নিজেও এর তদারকি করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ আমড়ার বিস্ময়কর ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে কিভাবে প্রভাবিত করে
প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে কিভাবে প্রভাবিত করে এ সম্পর্কে আমরা অনেকেই হয়তো বুঝিনা। বিংশ শতাব্দীতে প্রযুক্তিতে একটি বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। সে সময়ে ক্যাসেট, ডিস্ক, পেনড্রাইভ, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট এবং মোবাইল আবিষ্কৃত হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই বিংশ শতাব্দীতে পেছনে ফেলে একবিংশ শতাব্দী রাজত্ব করে চলছে। বিশেষ করে বর্তমানে সবচেয়ে প্রলয়কারী আবিষ্কার হচ্ছে মোবাইল, এই মোবাইল সেই শতাব্দীর আবিষ্কার গুলোকে একরকম গিলে খেয়েছে বলা যায়।
এখন বর্তমানে কেউ আর রেডিও টেলিভিশন এবং সিনেমা হলে কি সিনেমা দেখে না। এখন নিজ ইচ্ছামত মানুষ ইন্টারনেটে সার্চ করে তার পছন্দমত তথ্য বা মুভি দেখছে। একটা সময় ছিল যখন মানুষের কাছে এসব প্রযুক্তি ছিল না। তখন মানুষের মাঝে একটা সুসম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। সেই বিংশ শতাব্দীতে মানুষ একজন আরেকজনের কাজে আসতো আর এখন বর্তমানে ডিজিটালাইজেশন এর ফলে প্রযুক্তি নির্ভরতা ও উন্নয়ন বেড়ে যাওয়ার কারণে কেউ কারো তেমন কোন কাজে আসে না।
একটা সময় ছিল যখন মানুষ একজনের ক্ষেতে কাজ করার জন্য মানুষ প্রয়োজন ছিল কিন্তু এখন বর্তমান এ সময়ে মেশিনের সাহায্যে সেই কাজগুলো করে নিচ্ছে। যার ফলে প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক থাকছে না। ডিজিটাল প্রযুক্তি একটি দেশের মানুষের জীবন যাত্রায় কেমন পরিবর্তন আনতে পারে তা আমরা ইতিমধ্যেই দেখতে পাচ্ছি ভবিষ্যতে আরো দেখতে পাবো। তাই বলা যায় যে ডিজিটাল প্রযুক্তির ফলে আমাদের একটু সমস্যা হয়েছে তবে উপকারও রয়েছে।
যদি আমরা একটু লক্ষ্য করি দেখব আগের দিনে মানুষের একটি কাজ করার জন্য অনেক সময় লাগতো। কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভরতা ও উন্নয়ন আমাদের জীবনকে ইতিবাচক কিছু পরিবর্তনও করে দিয়েছে। আগের দিনে মানুষের কাজ করতে যে সময় লাগতো এখন বর্তমানে তার অর্ধেকের কম সময়ে সে কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। তাই বলা যায় যে ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে কিভাবে প্রভাবিত করে তা আমরা বুঝতে পেরেছি। ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করার ফলে আমাদের জীবনে নানান পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
বর্তমানে এই যুগে ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তবে অবশ্যই আমাদের ডিজিটাল প্রযুক্তির ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক বিবেচনা করে ইতিবাচক দিকগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।
শেষ কথাঃ ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে
ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে, এ সম্পর্কে ডিজিটাল প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনে একটি আমুল পরিবর্তন বয়ে এনেছে। এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সকল কার্যক্রমকে পরিচালনা করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এর যেমন ভালো দিক রয়েছে তেমনি এর খারাপ দিকটাও রয়েছে।
তাই অবশ্যই এ দিকটি চিন্তাভাবনা করে চলতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তি যোগাযোগের ক্ষেত্রে, শিক্ষার ক্ষেত্রে, ব্যবসা ও অর্থনীতিতে, চিকিৎসা খাতে, বিনোদনে, সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে, পেপার লেস কার্যক্রমে এবং ভ্রমণে একটি নতুন উদ্যম নিয়ে এসেছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ফলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কার্যক্রমকে সহজে সুন্দর করা সম্ভব। তবে এ বিষয়ে অবশ্যই যথার্থ জ্ঞান অর্জন করতে হবে। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
জ্ঞান পিপাসুর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url