রূপচাঁদা মাছের ক্ষতিকর দিক (স্বাস্থ্যঝুঁকি ও সতর্কতা)
রূপচাঁদা মাছের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে এই ব্লগে জানাবো। পুষ্টিগণ ও স্বাদ সমৃদ্ধ অতি জনপ্রিয় মাছ রূপচাঁদা। এই ব্লগে রূপচাঁদা মাছ চেনার উপায় সম্পর্কেও আপনাদেরকে জানাবো। এই রূপচাঁদা মাছে বিদ্যমান থাকে প্রোটিন, খনিজ ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। তবে এই মাছ খাবার ফলে কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি অর্থাৎ ক্ষতিকর দিক রয়েছে।
অনেকেই এই রূপচাঁদা মাছের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে জানেন না। রূপচাঁদা একটি সামুদ্রিক মাছ। সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। রূপচাঁদা মাছের উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা রয়েছে। তাই আজকে আপনাদেরকে রূপচাঁদা মাছের ১০টি ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানাবো।
পোস্ট সূচিপত্রঃ রূপচাঁদা মাছের ক্ষতিকর দিক
- রূপচাঁদা মাছের ক্ষতিকর দিক
- রূপচাঁদা মাছ চেনার উপায়
- ভারী ধাতুর উপস্থিতির জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি
- উচ্চমাত্রার ক্লোরেস্টেরল হৃদরোগের ঝুঁকি
- রাসায়নিক সংক্রমণ ও দূষণের প্রভাব
- এলার্জির ঝুঁকি বৃদ্ধিতে রূপচাঁদার মাছ
- অতিরিক্ত তেল শোষণে স্থূলতা ও হৃদরোগ
- হরমনের ভারসাম্যহীনতাতে রূপচাঁদা মাছ
- পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টিতে রূপচাঁদা মাছ
- অতিরিক্ত গ্রহনের ফলে রূপচাঁদা মাছের বিষক্রিয়া
- রূপচাঁদা মাছের ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবীর ঝুঁকি
- পরিবেশগত প্রভাব ও অতিরিক্ত সংগ্রহের ফলে সমস্যা
- শেষ কথাঃ রূপচাঁদা মাছের ক্ষতিকর দিক
রূপচাঁদা মাছের ক্ষতিকর দিক
রূপচাঁদা মাছের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আমরা অনেকেই অসচেতন। রূপচাঁদা মাছের স্বাদ অনেক এবং এর কিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে তবে এতে সামুদ্রিক মাছ আর ফলে এই রূপচাঁদা মাছের অনেক ক্ষতিকর দিক লক্ষ্য করা যায় যা আমরা অনেকেই জানিনা। রূপচাঁদা মাছে ওমেগা ৩ ফাইটি অ্যাসিড বিদ্যমান থাকে এছাড়াও এতে প্রোটিন ও খনিজ উপাদানে ভরপুর থাকে। সামুদ্রিক মাছের অনেক ক্ষতিকর দিক থাকে।
এ রূপচাঁদা মাছ সামুদ্রিক হওয়ার ফলে এরও কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। সামুদ্রিক মাছগুলোতে অনেক অনেক ভারী ধাতু থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এই ভারী ধাতু সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের ফলে আমাদের শরীরের নানান ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দেয়। তাই আমাদের এই বিষয়গুলোতে সচেতন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রূপচাঁদা মাছের উপকারিতা যে নেই তাও কিন্তু নই।
আরো পড়ুনঃ খালি পেটে চিনা বাদাম খাওয়ার ১০ উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
রূপচাঁদা মাছ চেনার উপায়
অনেকেই রূপচাঁদা মাছ চিনেন না বাজারে কিনতে গিয়ে রূপচাঁদা মাছের নামে ব্যবসায়ীরা অন্য মাছ ধরিয়ে দেয়। তাই চলুন জেনে নিই রূপচাঁদা মাছ চেনার উপায়।
- রূপচাঁদা মাছের শরীর কিছুটা গোলাকার এবং চ্যাপ্টা হয়ে থাকে।
- রূপচাঁদা মাছকে এক পাশ থেকে দেখলে পাতলা আকৃতির দেখায়।
- রূপচাঁদা মাছের রং হালকা ধূসর এবং উজ্জ্বল রুপালি রংয়ের হয়ে থাকে।
- রূপচাঁদা মাছের ত্বক মূলত মসৃণ এবং সুক্ষ আঁশ বিশিষ্ট হয়ে থাকে।
- রূপচাঁদা মাছের মাথা ছোট হয়ে থাকে এবং কিছুটা নিচের দিকে নেমে আসার মতো।
- রূপচাঁদা মাছের মুখ ছোট হয়ে থাকে এবং মুখটা একটু উঁচু হয়ে থাকে।
- রূপচাঁদা মাছের পিঠের ও পেটের যে কাঁটাগুলো বা পাখনা গুলো থাকে তা মূলত কিছুটা লম্বা এবং ধারালো হয়ে থাকে।
- লেজের কাঁটা দুদিকে ছড়ানো এবং ধারালো হয়ে থাকে।
- এটি মূলত সামুদ্রিক মাছ তবে এর কিছু প্রজাতির নদীতেও দেখা যায়
- রূপছাড়া মাছের মাংস নরম তেল যুক্ত ও অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে।
- রূপচাঁদা মাছের মাংসের ভিতরে কাটা কম থাকে।
ভারী ধাতুর উপস্থিতির জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি
রূপচাঁদা মাছের ক্ষতিকর দিক অনেক, অন্যান্য সামদ্রিক মাছের মত রূপচাঁদা মাছেও ভারী ধাতু বিদ্যমান থাকে। রূপচাঁদা মাছে পারদ, সীসা ও ক্যাডমিয়াম ধাতু জমা হতে পারে। সমুদ্রের পানিতে শিল্প কারখানার বর্জ্য ও সমুদ্র দূষণের কারণে এই ধাতুগুলো মাছের শরীরের জমা হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন যাবত আমাদের শরীরে এ ধাতুগুলো জমা হয়ে থাকলে স্বাস্থ্যঝুঁকির সৃষ্টি হতে পারে। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায় যে পারদ আমাদের শরীরের স্নায়ুতন্ত্রের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
এই পারদ আমাদের শরীরে দীর্ঘদিন যাবত থাকার ফলে কিডনির কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে এবং শিশুদের ক্ষেত্রে এটি অনেক ক্ষতির সম্মুখীন করে। পারদ মস্তিষ্ক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। সিসা ও ক্যাডমিয়াম অনেক বিষাক্ত যা আমাদের শরীরের হাড়ের এবং রক্তস্বল্পতা সৃষ্টি করে। এছাড়াও এটি লিভারের সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই আমাদের অতিরিক্ত পরিমাণে রূপচাঁদা মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
উচ্চমাত্রার ক্লোরেস্টেরল হৃদরোগের ঝুঁকি
রূপচাঁদা মাছের অনেকগুলো প্রজাতি রয়েছে। তার মধ্যে কিছু প্রজাতিতে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল বিদ্যমান থাকে, যেটি আমাদের অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ক্লোরেস্টেরল মানবদেহের ধমনী গুলোতে জমা হয় যার ফলে ধমনী সংকুচিত হয়। এ থেকে শরীরে রক্ত প্রবাহতে বাধার সৃষ্টি হয়। ধমনী গুলোতে রক্ত প্রবাহ ঠিকমতো চলতে না পারার কারণে হাই ব্লাড প্রেসার, স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অনেকের আগে থেকেই ক্লোরোস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকে বা হাই ব্লাড প্রেসার থাকে তাদের ক্ষেত্রে রূপচাঁদা মাছ নিয়মিতভাবে খেলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। বিশেষজ্ঞগণ পরামর্শ দিয়ে থাকেন যে সঠিক পরিমাণে সামুদ্রিক মাছ খাওয়ায় উপকারী তবে উচ্চ ক্লোরোস্টেরল যুক্ত খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাই বলা যায় যে ক্লোরেস্টেরল এর মাত্রা বেশি বা উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের এটি এড়িয়ে চলায় উত্তম।
আরো পড়ুনঃ ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে পরিবর্তন করেছে
রাসায়নিক সংক্রমণ ও দূষণের প্রভাব
রূপচাঁদা মাছের ক্ষতিকর দিক গুলো লক্ষ্য করলে দেখা যায় এটি মূলত যে কারণে অত্যধিক ক্ষতিকর তা হলো সমুদ্রে পানি দূষণ এর ফলে মাছের শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি। শিল্প কারখানার বর্জ্য ও কৃষি ক্ষেত্র থেকে আসা রাসায়নিক সার কীটনাশক ও প্লাস্টিক বর্জ্য দূষণ এর রাসায়নিক পদার্থ জমা হয় সেই পানি গুলোতে রূপচাঁদা মাছ থাকার ফলে রূপচাঁদা মাছে রাসায়নিক পদার্থ জমা হয় আর সেই মাছ আমাদের খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরেও রাসায়নিক সংক্রমণ দেখা দেয়। এই দূষিত মাছ খাওয়ার ফলে আমাদের দেহের বিষক্রিয়া হতে পারে এবং লিভার ও কিডনির বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
রাসায়নিক পদার্থ যেসব মাঠের মধ্যে থাকে এগুলো খেলে আমাদের হজমতন্ত্রের সমস্যা হওয়ার মন্ত্র সমস্যা ও ক্যান্সার রোগী বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও মাছ ধরার পরে অনেক সময় অস্বাস্থ্যকর ভাবে অর্থাৎ রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে সংরক্ষণ করা হয় যার ফলে আমাদের শরীর নানান ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। তাই আমাদের মাছ কেনার ব্যাপারে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। মাছ কেন সময় আমাদের ভালোভাবে দেখে নিতে হবে যে মা পরিষ্কার পানির ছিল নাকি একটি ধরা পড়ে রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
এলার্জির ঝুঁকি বৃদ্ধিতে রূপচাঁদ মাছ
অনেকে দেখা যায় এইসব রূপচাঁদা মাছের মতো সামুদ্রিক মাছ ছেলে শরীরের চুলকানি কলা ভাব শ্বাসকষ্ট কিংবা পেটের নানান ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এটি মূলত হিমাস্টিন অথবা অন্যান্য এলার্জিক প্রতিক্রিয়ার কারণে ঘটে থাকে। হিমাস্টিন বিষক্রিয়া অনেক সময় মাছ সঠিক প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ না করার কারণে হয়ে থাকে এবং দীর্ঘদিন ধরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অর্থাৎ রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে সংরক্ষণ করার ফলে হিমাষ্টিন বিষক্রিয়া বৃদ্ধি পায়।
অনেক মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যায় তাদের ইমিউনিটি সিস্টেমের ফলে সামুদ্রিক মাছের প্রোটিন গ্রহণ করার ফলে শরীরে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, যা মারাত্মক আকারে এলার্জি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই যারা রূপচাঁদ মাছ খাওয়া ব্যাপারে আগ্রহী তাদের রূপচাঁদা মাছ খাওয়ার আগে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং এটি খাওয়ার পরে যদি কোন ধরনের এলার্জি বা অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
এই ওয়েবসাইটের আরো জনপ্রিয় পোস্ট
লুডু গেম খেলে প্রতিদিন ৫০০ টাকা আয় পেমেন্ট বিকাশে
অতিরিক্ত তেল শোষণে স্থলতা ও হৃদরোগ
রূপচাঁদা মাছকে সুস্বাদু করার জন্য ভাজা বা মসলাযুক্ত করে রান্না করা হয়, যার ফলে অতিরিক্ত তেল শোষণ করে। বিশেষ করে রেস্টুরেন্ট গুলোতে বা স্ট্রিট ফুডে মাছগুলোকে সুস্বাদু করার জন্য প্রচুর পরিমাণে তেল এবং মসলা ব্যবহার করা হয় আমাদের স্থূলতা ও হৃদয়ের জন্য ঝুঁকির কারণ না দাঁড়ায়। অতিরিক্ত তেল চর্বি গ্রহণের ফলে আমাদের ডায়াবেটিস হাই ব্লাড প্রেসার হৃদরোগের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে কম তেলে ও কম মসলা যুক্ত করে রান্না করতে হবে, এতে করে আমাদের শরীরে সেই জিনিসটার পুষ্টিগুন ঠিকমতো শোষিত হয় এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি কমে যাই। তাই আমাদের অবশ্যই শারীরিক সুস্থতা এবং বজায় রাখার জন্য তেল কম দিয়ে এবং মসলা কম যুক্ত করে রান্না করে খেতে হবে করে আমাদের স্থূলতা ও হৃদরোগের ঝুঁকি থাকবে না।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতাতে রূপচাঁদা মাছ
কিছু কিছু গবেষণা দেখা গেছে যে সামুদ্রিক মাছগুলো সমুদ্রে যে খাবারগুলো খাই তা অনেক সময় দূষিত থাকে। এই দূষিত খাবারগুলোতে রাসায়নিক উপাদান বিদ্যমান থাকার ফলে শরীরে হরমোনের বড় ধরনের একটা পরিবর্তন অর্থাৎ বিঘ্নতা ঘটে। ফসফেট ও অন্যান্য রাসায়নিক যে উপাদান গুলো থাকে তা আমাদের এন্ডোক্রাইন সিস্টেম এর উপর একটি বিরূপ প্রভাব ফেলে। শুধু তাই নয় এটি আমাদের প্রজনন ক্ষমতার ওপর অনেক বড় একটি বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে।
এই রাসায়নিক পদার্থগুলো ইস্ট্রোজেন এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয় যার ফলে পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রানুর সংখ্যা কমিয়ে দেয় এবং নারীদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিক ও বন্ধ্যাত্বের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও এই রাসায়নিক পদার্থগুলো অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে থাকে যার ফলে পুরুষ ও নারীদের উভয়েটি হরমোন জনিত নানান ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই বলা যায় যে রূপচাঁদা মাছ খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
আরো পড়ুনঃ সকালে খালি পেটে রসুন ও মধু খাওয়ার ৮ টি উপকারিতা জানুন
পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টিতে রূপচাঁদা মাছ
রূপচাঁদা মাছ সংরক্ষণের জন্য যে রাসায়নিক পদার্থগুলো ব্যবহার করা হয় তা পুরোপুরি অস্বাস্থ্যকর। রাসায়নিক পদার্থগুলো মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটি আমাদের পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এ মাছ গুলো সংরক্ষণের জন্য সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তাপমাত্রা সঠিক পরিমাণে বজায় না রাখলে এতে ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হতে পারে যা আমাদের খাবারে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে থাকে।
খাবারে বিষক্রিয়া সৃষ্টির ফলে ডায়রিয়া, বমি ও পেট ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে। তাই আমাদের এ বিষয়ে অনেক সতর্ক থাকতে হবে। দীর্ঘদিন যাবত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সংরক্ষণ করা কেনা থেকে দূরে থাকতে হবে। আর যাদের আগে থেকেই এলার্জি সমস্যা হয় ব্লাড প্রেসার সমস্যা রয়েছে তাদের এটি এড়িয়ে চলা উচিত। এছাড়াও রূপচাঁদা মাছ বেশি তেল যুক্ত হওয়ায় হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই যাদের পিত্তথলির সমস্যা রয়েছে তাদের এটি এড়িয়ে চলা উচিত।
অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে রূপচাঁদা মাছের বিষক্রিয়া
অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয় এটা আমরা ছোটবেলা থেকেই জেনে আসছি। তেমনি অতিরিক্ত পরিমাণে যেকোনো ধরনের খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। রূপচাঁদা মাছ প্রাকৃতিকভাবেই তেল চর্বি বেশি থাকে, এছাড়াও এই রূপচাঁদা মাছে ভারী ধাতু ধন থাকে যা আমাদের শরীরের ঝুঁকির কারণ। শিল্প ও কল কারখানার বর্জ্য পদার্থ সমুদ্রের পানিতে মিশে দূষণ সৃষ্টি করে, এই দূষিত খাবার গুলো মাছেরা গ্রহণ করার ফলে তাদের শরীরে সিসা ও ক্যাডমিয়াম জমা হয়।
এগুলো মানব দেহের জন্য বিষ স্বরূপ। এছাড়াও এই মাসে অতিরিক্ত পরিমাণে তেল চর্বি থাকায় শারীরিক স্থূলতা বৃদ্ধি করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই এই মাছ অতিরিক্ত গ্রহণ করার ফলে আমাদের দেহের নানান ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তাই আমাদের এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যাদের ক্লোরেস্টেরল বেশি তাদের এটি এড়িয়ে চলা উচিত।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির ১০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
রূপচাঁদা মাছের ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবী ঝুঁকি
সামুদ্রিক সকল মাছগুলোতেই ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবের ঝুঁকি থাকতে পারে। তেমনি রূপচাঁদা মাছেও ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবী আক্রমণের ঝুঁকি থাকতে পারে। সামুদ্রিক মাছগুলোতে ভিব্রিও ও অ্যানিসাকিস লার্ভা থাকে। ভিব্রিও ব্যাকটেরিয়া গুলো সমুদ্রে ও জলজ পরিবেশে পাওয়া যায়। কাঁচা বা পর্যাপ্ত পরিমাণে রান্না না করা রূপচাঁদ মাছ খেলে ডায়রিয়া বমি এমনকি আরো নানান ধরনের বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই ভিব্রিও ব্যাকটেরিয়া মূলত আসে অপরিষ্কার দূষিত পানি থেকে।
অ্যানিসাকিস লার্ভা সামুদ্রিক মাছগুলোতে থাকে এটি মানুষের অন্তে প্রবেশ করতে পারে। এটি যদি মানুষের অন্তে প্রবেশ করে তাহলে পেট ব্যথা, বমি ভাব ও এলার্জি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এটি প্রতিরোধ করার জন্য যে ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করতে পারি তা হলো সঠিক তাপমাত্রা অর্থাৎ ৭৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রান্না করা, ফ্রিজে বিষ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে সংরক্ষণ করা, কাঁচা মাছ খাওয়া থেকে দূরে থাকা, রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে সংরক্ষণ করা মাছ কেনা থেকে দূরে থাকা ও রান্নার সময় হাড়ি পাতিল ও হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করে রান্না করা।
পরিবেশগত প্রভাব ও অতিরিক্ত সংগ্রহের ফলে সমস্যা
রূপচাঁদা মাছ অতিরিক্ত পরিমাণের সংগ্রহ এবং পরিবেশগত প্রভাব একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্য ও মৎস্য সম্পদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
অতিরিক্ত আহরণের ফলে সমস্যা
জনসংখ্যা হ্রাসঃ রূপচাঁদা মাছ পরিমাণের সংগ্রহ করার ফলে এর জনসংখ্যা কমে যাচ্ছে যা সামুদ্রিক জীব বৈচিত্রের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
প্রজনন চক্র ব্যাহত হওয়াঃ যখন এই রূপচাঁদা মাছগুলো কম বয়সী থাকে তখন এটি সংগ্রহ করা ফলে পরিপক্ক হয়ে ডিম দেয়ার মতো সুযোগ পায় না, ফলে মাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে
অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর উপর প্রভাবঃ রূপচাঁদা মাছ খাদ্যশৃঙ্খের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অতিরিক্ত স্বীকার করার ফলে ডলফিন হাঙ্গর ও আরো বড় বড় মাছের খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে।
পরিবেশগত প্রভাব
অবৈধ মাছ সংগ্রহঃ রূপচাঁদার মাছ অনেক সময় অবৈধভাবে ট্রলার মাধ্যম দিয়ে যা নিক্ষেপ করে ধরা হয়। যা সামুদ্রিক পরিবেশ ধ্বংস করে এবং অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর জীবননাশ ঘটায়।
অনিচ্ছাকৃত সমস্যাঃ অনিচ্ছাকৃত সত্ত্বেও মাছ ধরার সময় কচ্ছপ ছোট হাঙর ধরা পড়ে, যা পরে মারা যায়। অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জল দূষণ বৃদ্ধিঃ মাছ ধরার জাল প্লাস্টিক বর্জ্য ও তেল দূষণের ফলে সামুদ্রিক প্রাণী গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা রূপচাঁদা মাছ সহ আরো যে সকল সামুদ্রিক মাছ রয়েছে সকলের জন্য হুমকি স্বরূপ।
শেষ কথাঃ রূপচাঁদা মাছের ক্ষতিকর দিক
রূপচাঁদা মাছের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে এই ব্লগে অনেক আলোচনা করলাম। রূপচাঁদের মাছ পুষ্টিকর হলেও এটি খাওয়ার ব্যাপারে আমাদের অধিক সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। এই গ্রুপ ছাড়া মাছ খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের নানান ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এই রূপচাঁদা মাছ খাওয়ার ফলে আমাদের পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা হতে পারে, হরমোন জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে, এলার্জির সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে এবং হৃদরোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাই এই রূপটাতে মাছ খাওয়ার ব্যাপারে আমাদের অনেক সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। এই রূপচাঁদা মাছ স্বল্প পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে, তবে অধিক পরিমাণে খাওয়া যাবে না। এটি কেনার সময় আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, ভালোভাবে দেখে শুনে আমাদের এটি ক্রয় করতে হবে। আর যতটা সম্ভব এই রূপচাঁদা মাছ এড়িয়ে চলা উচিত। পুরো পোস্টে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
জ্ঞান পিপাসুর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url